২০০৯ সালের পহেলা মার্চ। আমাদের তখনকার বাড়ীওয়ালা আন্টির একটা কন্যা সন্তান হয়। তিনি খুব আগ্রহ নিয়ে কন্যার নাম রাখেন ইফরিত। হাসপাতাল থেকে বাসায় এলেন, কিন্তু দেখলেন তার কয়েকদিন বয়সি কন্যা অদ্ভুত আচরণ করছে, নির্দিষ্ট এক দিকে কারুর দিকে তাকিয়ে হাসছে আর অদ্ভুত ভাষায় কথা বলছে ( শিশুদের আঁ অঁ ওঁ বোল না, একটা অচেনা ভাষা) , আবার কখনো অবিশ্রান্ত সারারাত কান্না করছে এটুকু বাচ্চা। সেই কয়েকমাস বয়সি ইফরিত খুব অল্প সময়েই হাটা শুরু করছে বিন্দুমাত্র কারুর সাহায্য না নিয়ে। আবার পরিষ্কার ভাবে নাম ধরে সবাইকে ডাক দেয়াও শুরু করছে। তখন তার বয়স ৭/৮ মাস। শিশুটির সবচেয়ে ভয়ানক ব্যাপার ছিল তার চোখ। একটা অপার্থিব চোখ। যেন অন্যভুবনের কেউ। এ যেন এক অপার্থিব অলৌকিক এক শিশু। সবচেয়ে ভয়ানক ব্যাপারটি হচ্ছে একদিন দেখি ১ বছর বয়সি ইফরিত আমার বিছানায়,তখন অনেক রাত,প্রায়ান্ধকার দরজা বন্ধ ঘরে আমি ঘুমুচ্ছি। আমার ঘুম ভেঙ্গে যেতেই দেখি বিছানায় আমার পায়ের দিকে সে আমার দিকে সে তীব্র আক্রোশে তাকিয়ে আছে। আমি প্রচন্ড চিতকার করে বিছানা থেকে জেগে উঠি। দেখি কেউ নেই। যেদিন এই ঘটনা ঘটে তার আগের দিন আমি আন্টিকে বলেছিলাম ইফরিত নামের শাব্দিক অর্থ শয়তানের খারাপ আত্না। বলে রাখি তখন আমি কিছুটা কালোযাদু নিয়ে পড়াশোনা করছিলাম। ইফরিত নাম যে লুসিফারের আরেক নাম নাম এটা আন্টি বুঝতে পেরে প্রচন্ড ভয়ে শিউরে উঠেছিলেন।তিনি বলেছিলেন তার কন্যার মধ্যে অশুভ কিছু আছে এটা তিনি টের পান। তিনি খুব ভেঙ্গে পরেছিলেন। মনে আছে খুব দ্রুতই এক জুম্মার দিনে হুজুর ডেকে এনে মিলাদ দিয়ে শিশু ইফরিতের নাম পরিবর্তন করে জান্নাতুল মাওয়া রেখেছিলেন। এরপর থেকে দেখলাম শিশুটি একদম স্বাভাবিক। ওই বয়সের একজন স্বাভাবিক শিশুর মত আচরণ।
এখন বলি, সেই আন্টি ইফরিত নামটা কোথায় পেয়েছিলেন। এটার সাথে বাংলাদেশের খুব দুঃখজনক একটা ঘটনার সাথে সম্পর্ক আছে। সেই আন্টি তার কন্যা ইফরিতের জন্ম দিয়েছিলেন যে হাসপাতালে, তিনি বাচ্চাসহ তার কেবিনে আসার পর রুমে থাকা টিভির দিকে তার চোখ পরলো। দেখেন টিভিতে দেখাচ্ছে ঢাকার পিলখানায় বিডিআর জওয়ানরা অসংখ্য সেনা অফিসারকে নির্মম ভাবে মেরে ফেলেছে। তিনি দেখলেন জনৈক নিহত এক লে. কর্ণেলের কন্যা তার পিতার হত্যার ব্যাপারে কথা বলছে, তিনি স্ক্রিনে দেখলেন সেই মেয়েটির নাম ইফরিত। ঠিক তখনি তিনি ঠিক করেছিলেন তার কন্যার নাম রাখবেন ইফরিত। আপনারা "ইফরিত পিলখানা" লিখে গুগল করলে জানতে পারবেন তথ্যটির সত্যতা। হয়ত অনেকেই এ নামটি ব্যাবহার করছেন, তাদের সমস্যা হচ্ছে না। তবে শুনেছি ইসলামে বলা হয়েছে শিশুর নামের প্রভাব তার উপর পরে।