বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন? আজ আপনাদের মাঝে হাজির হলাম একটি গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে। কিভাবে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করা যায়। তা নিয়ে আলোচনা করবো। তাহলে দেরি কেন? চলুন শুরু করা যাক।
জন্ম নিবন্ধন করতে আমাদের বিভিন্ন রকম সমস্যাই পড়তে হতো। কখনও আবার টাকার খরচ করেও মিলতো না জন্ম নিবন্ধন সনদ। আবার টাকা দিয়ে ভুয়া জন্ম নিবন্ধন করে নিতে হতো তাতে বিভিন্ন সমস্যায় । কিন্তু এখন আর সেই সমস্যায় পড়তে হবে না। এখন আর আপনাকে টাকার বিনিময়ে নাকি ভুয়া জন্ম নিবন্ধন বা Birth Certificate নিতে হবে না। সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভুয়া জন্ম নিবন্ধন ব্যবহারে আমাদের আর বিড়ম্বনার স্বীকার হতে হবে না। কোন প্রতিষ্ঠানে আপনার জন্ম নিববন্ধন সার্টিফিকেট ব্যবহার করার আগে, আপনি বা আমরা নিজেই যাচাই করে নিতে পারবো। আমাদেন জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট আসল, না ভুয়া। অনলাইনে খুব সহজেই আমরা ভেরিফাই করে নিতে পারবো আমাদের জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেটটি। আবার নতুন জন্ম নিবন্ধন ফর্ম সংগ্রহ করে, নতুন জন্ম নিবন্ধনের কাজটিও আমরা নিজেরাই করতে পারবো এই অনলাইনের মাধ্যমেই।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে |
জন্ম নিবন্ধন কী
জন্ম নিবন্ধন হচ্ছে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০০৪ (২০০৪ সনের ২৯ নং আইন) এর অধিনে একজন মানুষের নাম, লিঙ্গ, জন্মের তারিখ ও স্থান, বাবা-মায়ের নাম, তাদের জাতীয়তা এবং স্থায়ী ঠিকানা নির্ধারিত নিবন্ধক দ্বরা রেজিস্টারে লেখা বা কম্পিউটারে এন্ট্রি প্রদান এবং জন্ম সনদ দেওয়া হয়।
জন্ম নিবন্ধন কি কি কাজে ক্ষেত্রে লাগেঃ
১) পাসপোর্ট ইস্যু কাজে লাগে জন্ম নিবন্ধন।
২) বিবাহ নিবন্ধন লাগে জন্ম নিবন্ধন।
৩) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি কাজে লাগে।
৪) সরকারী, বেসরকারী বা স্বায়ত্বশাসিত সংস্থায় নিয়োগদানের জন্য লাগে।
৫) ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ক্ষেত্রে লাগে।
৬) ভোটার তালিকা প্রণয়ন ক্ষেত্রে লাগে।
৭) জমি রেজিষ্ট্রেশনের ক্ষেত্রে লাগে।
৮) ব্যাংক হিসাব খোলার কাজে লাগে।
৯) জন্ম নিবন্ধন আমদানি ও রপ্তানী লাইসেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে লাগে।
১০) জন্ম নিবন্ধন গ্যাস, পানি, টেলিফোন ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে লাগে।
১১) ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) প্রাপ্তির ক্ষেত্রে লাগে।
১২) ঠিকাদারী লাইসেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে লাগে।
১৩) বাড়ির নক্সা অনুমোদন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে লাগে।
১৪) গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্তির জন্য লাগে।
১৫) ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি ও
১৬) জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তির জন্য লাগে।
জন্ম নিবন্ধন না করলে অনেক ক্ষেত্রে সমস্যা বা অসুবিধা হয়।
যেমনঃ
১) শিশু হিসেবে শিশুদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে হয়।
২) যেমন- মেধাবী হওয়া পর ভালো একটা স্কুলে ভর্তি হওয়া যায় না।
৩) সঠিক সময়ে সঠিক ও উন্নতমানের চিকিৎসা পাওয়া যায় না।
৪) নিরাপত্তাসেবা থেকে অনেক বঞ্চিত হতে হয় শিশুদের।
৫) আদালতে মিথ্যা অভিযোগ প্রমাণের জন্যও প্রকৃত বয়স প্রমাণ করতে না পারার কারণে অনেক শিশুকে বছরের পর বছর জেল বা হাজতে থাকতে হয়।
৬) জন্ম নিবন্ধন ছাড়া পাসপোর্ট করা যায় না। তখন প্রয়োজন থাকা সত্বেও বিদেশে যাওয়া যায় না।
৭। জন্ম নিবন্ধন ছাড়া ভোটার হওয়া যায় না। তখন রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি নির্বাচনে নিজের পছন্দ/ অপছন্দ প্রয়োগ করা যায় না।
৮) যোগ্যতা থাকা সত্বেও ভালো চাকুরীতে যোগদান করা যায় না।
৯) বিয়ের মতো সামাজিক কাজেও বাধা আসে।
১০) রাষ্ট্র জনগণের জন্য প্রয়োজনমত সেবা দিতে পারে না।
১১) জন্ম নিবন্ধন সনদ না থাকায় শিশুরা লেখাপড়া থেকে দূরে ছিটকে পড়ে,এবং বিপদগামী হয়। পরে সমাজের বোঝা হয়ে পড়ে।
১২) জটিল চিকিৎসা নেয়া যায় না। তখন অনেক সময় জীবনহানিও ঘটে।
১৩) জমি-জমা ক্রয়-বিক্রয় করা যায় না।
১৪) সরকারী-বেসরকারী সেবা ও সম্পদের বরাদ্দ পাওয়া যায় না।
১৫) জন্ম নিবন্ধন ছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্য ভালোভাবে করা যায় না।
জন্ম নিবন্ধন আবেদন কিভাবে করবেনঃ
উত্তর: জন্ম নিবন্ধনের নির্ধারিত আবেদন ফরমে (ছাপানো বা হাতে লিখা হলেও চলবে) নিবন্ধকের নিকট নিচের বর্ণিত দলিল বা প্রত্যয়নসহ আবেদন করতে হবে। এছাড়াও br.lgd.gov.bd ওয়েব সাইটে প্রবেশ করে নিদিষ্ট নিবন্ধকের কার্যালয় বরাবর অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করায় যায়।
নিবন্ধক কার্যালয়ের জন্য জন্ম স্থান বা স্থায়ী ঠিকানার, বিভাগ, জেলা, বিভিন্ন ধাপ পার হয়ে ওয়ার্ড পর্যন্ত নির্বাচন করতে হবে। অনলাইন জন্ম নিবন্ধনের আবেদন ফরম প্রথমে বাংলায় (ইউনিকোড) ও পরবর্তীতে ইংরেজিতে ফিলাপের পর প্রয়োজনীয় সব কাজ করে সংরক্ষণ বাটনে ক্লিক করতে হবে। সংরক্ষণ বাটনে ক্লিক করলেই আবেদন পত্রটি সংশ্লিষ্ট নিবন্ধক কার্যালয়ে পর হয়ে যাবে। আবেদনকারীর আর কোন সংশোধনের সুযোগ থাকবে না। এর পর পরবর্তী ধাপে প্রিন্ট বাটনে ক্লিক করলে আবেদন পত্রের অনলাইন কপি পাওয়া যাবে। সনদের জন্য ১৫ দিনের মধ্যে ঐ আবেদন পত্রে নির্দেশিত প্রত্যয়ন সংগ্রহ করে যদি লাগে ক্ষেত্রে প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপিসহ নিবন্ধক অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। আবেদনের প্রিন্ট কপি নিবন্ধন অফিসে দাখিল করলে নিবন্ধক জন্ম নিবন্ধন করতে পারবেন (অনলাইনে আবেদন করতে এখানে ক্লিক করেন?