সম্রাট একদিন বললেন, "ওহে বীরবল, এমন এক ব্যক্তিকে শহর থেকে ধরে আনো, যে ব্যক্তি একই সঙ্গে যেমন অসীম সাহসী, তেমন ভীতু। যদি না আনতে পারো তবে তোমার মৃত্যুদণ্ড কেউ রোধ করতে পারবে না। ।
কঠিন কাজ সন্দেহ নেই। একদিকে সম্রাটের আজ্ঞা পালন, অন্যদিকে মৃত্যুভয়। বীরবল সেদিনকার মতো বিদায় নিলেন। বিদায় নিয়ে যেতে যেতে বেশ রাত হয়ে গেছে। সেদিন ছিল ঘোর অন্ধকার ও প্রচণ্ড ঝড় বাতাসের দিন। পথে বীরবল এক তরুণী মেয়েকে হেঁটে যেতে দেখলেন। তিনি তার পিছু নিয়ে সেই রাতের সমস্ত প্রত্যক্ষ করলেন।
পরদিন বীরবল রাজসভায় এলেন আগের রাতের সেই তরুণী মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে। দরবারের সবাই অবাক। হতকচিত সম্রাট বললেন, ‘এর মানে কী বীরবল ? একে এনেছ কেন ??
‘হুজুর তবে শুনুন, বীরবল বললেন, ‘এই মেয়েটি মাঝ-রাত্তিরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। ঝড় বৃষ্টি বজ্রপাত, সাপ-বাঘের ভয়, শেয়াল কুকুরের ভয়, অন্ধকার পথঘাট কিছু পরোয়া না করে একজনের কাছে চলে যায়, তাকে এ মেয়েটি
গভীর ভালবাসে। সশস্ত্র পাহারাকে ফাঁকি দিয়ে সমস্ত বিপদ তুচ্ছ করে নিজের লক্ষ্যে গিয়ে ঠিক পৌছয় প্রতিদিন। আবার এই মৃত্যুর ভয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে। বলুন তো এর চেয়ে সাহসীই বা কে, ভীতুই বা কে আর? আপনিই বিচারকর্তা, এর বিচার আপনি করুন।’ ।
সম্রাট মুগ্ধ হলেন বীরবলের এই বিচার বুদ্ধির কথা শুনে।